বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় - বুকের মাঝখানে ব্যথার কারণ

বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কি হতে পারে। পৃথিবীব্যাপী বুকের মাঝখানে ব্যথার সমস্যা বেড়েই চলেছে। আমরা এই পোস্টে আপনাকে বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কি এই সম্পর্কে বলবো। বিস্তারিত জানতে বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কি এবং বুকের মাঝখানে ব্যথার কারণ পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
হৃদপিন্ডে মাঝে মাঝে বুকের মাঝখানে যে ব্যথা হয় সেটি খুবই মারাত্মক পর্যায়ে চলে যায়। যদি আপনার বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কি এই বিষয়ে কোন ধারনা না থাকে এবং বুকের মাঝখানে ব্যথা করার কারণ কি সেই সম্পর্কে যদি না জানেন তাহলে অনেক সমস্যায় পড়তে পারেন। তাই নিজেকে সচেতন করতে এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিন।

পেজ সূচিপত্র

বুকের মাঝখানে ব্যথা কেন

হাড়ে ব্যথা পাওয়ার ফলে ও মাংসপেশীতে আঘাতপ্রাপ্ত হলে বুকের মাঝখানটাই ব্যথা করতে পারে। বিভিন্ন ধরনের কারণ এর ফলেই আপনার বুকের মাঝখানে ব্যথা করতে পারে। যেমন ফুসফুসে ক্যান্সার সংক্রমণ হলে, নিউমোনিয়া, অতিরিক্ত টেনশন, গ্যাস হওয়া ও হৃদজনিত কোন সমস্যা হলে বুকের মাঝখানে ব্যথা করতে পারে। 

আরও পড়ুনঃ রাকৃতিকভাবে সুন্দর থাকার উপায়

অনেক সময় হার্ট অ্যাটাকের ফলেও বুকের মাঝখানে চাপ দিয়ে ব্যথা করতে পারে। এই ব্যথা প্রথম দিকে অল্প সময়ে ধরে থাকে এবং ধীরে ধীরে তা খুব বেশি বেড়ে যেতে থাকে। যা প্রথম অবস্থায় পাঁচ মিনিটের মতো থাকতে পারে কিন্তু ধীরে ধীরে এই ব্যথা ২০ মিনিট থেকে ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় দীর্ঘ হতে পারে। অনেক সময় বুকের মাঝখানে কড়ি বৃদ্ধি পেলেও বুকে ব্যথা হয়।

বুকের মাঝখানে হাড়ে ব্যথা

হাড়ে বুকের মাঝখানে ব্যথা করার কারণ কি হতে পারে। যদি আপনি বুকের মাঝখানে হাড়ে কোন আঘাতপ্রাপ্ত হন অথবা দীর্ঘদিন ধরে আপনার যদি কাশি লেগেই থাকে তাহলে আপনার বুকের মাঝখানের হাড় খুব বেশি ক্ষতি হতে থাকে। আবার, অস্টিয়োপোরেসিস নামে এমন একটি হাড় রয়েছে যা দুর্বল হয়ে ভেঙে যেতে পারে।

অনেকের ক্ষেত্রে, বংশগত ভাবে এই সমস্যা হয় আর তা না হলে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এই হাড়টিও দুর্বল হতে থাকে। এই হাড়টির ঘনত্ব কম বলে খুব হালকা আঘাতেই ভেঙে যেতে পারে এবং বুকের মাঝখানে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হয়। আপনার শরীরের মধ্যে যদি ভিটামিন ডি ও প্যারাথাইরয়েড হরমোন এর অভাব থাকে তাহলে বুকের মাঝখানে প্রতিটি জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে। 

বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় হচ্ছে হাড়গুলোতে যদি ফোলা ভাব সৃষ্টি হয় সেই ক্ষেত্রে আপনি যদি শ্বাস নিতে থাকেন তাহলে ব্যথা অনুভব করবেন এবং কাশি দিলেও বুকের মাঝখানে অনেক ব্যথা হয়। বুকের মাঝখানে ব্যথার কারন এ অতিরিক্ত কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে এবং অতিরিক্ত উচ্চ রক্তচাপের ফলে ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগার ফলে আপনার বুকের মাঝখানে ব্যথার কারণ হয়। শারীরিক সমস্যার নানা কারণের ফলেও যেমন আপনার যদি হাঁটাচলার অভ্যাস না থাকে, ডায়াবেটিস যদি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে থাকে তাহলে আপনার এই বুকের মাঝখানে ব্যথা হতে পারে। সেইক্ষেত্রে আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শে চলার চেষ্টা করতে হবে।

বুকের মাঝখানে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা

গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা সাধারণত বুকের মাঝখানে বেশিরভাগ সময় হয়ে থাকে যা বুকে ব্যথার অন্যতম একটি কারণ। বিশেষ করে টানটান লাগার মত এক ধরনের অনুভব হয়ে থাকে যা খুবই যন্ত্রনাদায়ক। বুকের মাঝখানে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা হওয়ার কিছু অন্যান্য কারণে রয়েছে যার মধ্যে হল বদহজম যদি হয়।

বুকের মাঝখানে ব্যথা করার কারণ কি? বদহজম, যা হলে আপনার খাবার সহজে হজম হবে না যার ফলে আপনার মধ্যে টক ঢেঁকুর আসতে পারে। শরীরের ভিতর যে অতিরিক্ত পেটের গ্যাস সৃষ্টি হয় তা অনেক সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে ও বের হয়ে যায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণে হয়ে থাকে এবং বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় বিষয়ে জানতে হবে।

আপনার যদি ক্ষুধামন্দ্যা হওয়ার সমস্যা থাকে তাহলে খাবারের রুচি একদম থাকবে না বললেই চলে। বুকের মাঝখানে ব্যথার কারণ এ খুব ব্যথা অনুভব হবে যার জন্য গ্যাস্ট্রিক দায়ী। এমনকি আপনার পেটও ফোলে যেতে পারে। এই অবস্থায় বুকের মাঝখানের ব্যথাটা আপনার দেহের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

হাইপার অ্যাসিডিটি হওয়ার ফলে সাধারণত বুকের মাঝখানে ঠিক নিচের দিকটা বরাবর এই ব্যথা অনুভব হয়। সমস্যাটা খুব বেশি বেড়ে গেলে বুকের চারপাশে পুরোটাতে ছড়িয়ে পড়ে। খাবার না খাওয়া ও ভাজাপোড়া অতিরিক্ত খাওয়া বুকের মাঝখানে ব্যথার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। রেনিটিডিন ওষুধ খেলে অনেক সময় এই ব্যথা কমতে পারে।

বুকের মাঝখানে ব্যথা করার কারণ কি

বিশ্বের সকল দেশেই বুকের মাঝখানে ব্যথার সমস্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। আপনার যদি বুকের মাঝখানে ব্যথা করে তাহলে আপনাকে অবশ্যই বুকের মাঝখানে ব্যথা করার কারণগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। বুকের মাঝখানে ব্যথার কারণগুলোর সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। 

কারণ আপনি যদি বুকের মাঝখানে ব্যথার কারণগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখেন তাহলে এই সমস্যাগুলো থেকে নিজেকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে পারবেন। বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় এবং বুকের মাঝখানে ব্যথা হওয়ার কারণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে দেয়া হলো -

১। ফুসফুসে সমস্যা সৃষ্টিঃ 
শরীরের দৈহিক কাঠামোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলো ফুসফুস। আর এই ফুসফুসে যদি সমস্যার মূল কারণ হয় তাহলে বুকের মাঝখানে ব্যথার কারণ এ খুব যন্ত্রণায় ভুগতে হয়। আপনার ফুসফুসে যদি কোন কারণে বাতাস জমে যায় তাহলে ফুসফুসে প্রচন্ড চাপ উৎপন্ন হয়। আর তখনই ফুসফুস তার সঠিক কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে যার ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং বুকের মাঝখানে ব্যথা হয়।

২। হাঁপানি ও অ্যাজমাঃ 
হাঁপানি ও অ্যাজমা বুকের মাঝখানে ব্যথা হওয়ার আরেকটি বিশেষ কারণ যার ফলে শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিবেশ দূষিত হলে ধুলাবালি শ্বাসনালী দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করার ফলে অতিরিক্ত ঠান্ডা কাশির ফলে হাঁপানি ও এজমা হতে পারে যার ফলে বুকের মাঝখানে ব্যথা করতে পারে।

৩। গ্যাস্ট্রিক বা আলসারঃ 
মানব শরীরের বদহজমের প্রধান কারণ হচ্ছে গ্যাস্ট্রিক বা আলসার। পেটের যাবতীয় বর্জ্য পদার্থ পেটের ভিতর থেকে যখন বের হতে পারে না তখনই গ্যাসের সৃষ্টি হয় যার ফলে পেটে ব্যথা করতে থাকে। এই সমস্যার ফলে পেট ফেঁপে যায়, বুকে জ্বালা করতে থাকে এবং ধীরে ধীরে বুকে ব্যথার সৃষ্টি হয়।

৪। পাঁজরের আঘাতঃ 
বুকের মাঝখানে পাঁজর আঘাতপ্রাপ্ত হলে বুকে ব্যথা করতে পারে। কারণ আপনি যদি কোথাও পড়ে যেয়ে ভীষণভাবে আঘাত পেয়ে আপনার ফ্র্যাকচার হয়ে যায় তাহলে আপনার বুকে ব্যথা হতে পারে।

৫। হৃদপিন্ডের সমস্যাঃ 
বুকের মাঝখানে ব্যথার কারণ হচ্ছে অস্বাভাবিক রক্ত চলাচল। কার্ডিওভাসকুলার বা হৃদপিন্ডে স্বাভাবিকভাবে যদি রক্ত চলাচল করতে না পারে তাহলে বুকের মাঝখানে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যার ফলে পরবর্তীতে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়।

৬। ধূমপান করাঃ 
আপনার যদি ধূমপান করার অভ্যাস থাকে তাহলে ধূমপানের ফলে আপনার রক্তনালীর মধ্যে চর্বি জমে যায়। আপনার প্রতিটি করোনারি ধমনী সংকুচিত হয়ে হার্ট অ্যাটাকের সৃষ্টি করে এবং বুকের মাঝখানে ব্যথা তৈরি হয়।

৭। খাদ্যাভাসঃ 
অনেকেরই দেখা যায়, চর্বি জাতীয় খাবার খুবই পছন্দ। কিন্তু এই চর্বি জাতীয় খাবার আপনার দেহের ভিতরে পর্যাপ্ত ক্ষতিসাধন করে থাকে যেমন ফাস্টফুড জাতীয় খাবার। আবার অনেকেই রান্নায় অতিরিক্ত স্বাদ আনার জন্য অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করে যা হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয় এবং আপনার বুকে ব্যথাকে বাড়ায়।

৮। ডায়াবেটিসঃ 
ডায়াবেটিস আপনার প্রতিদিনের শান্তিকে বিনষ্ট করে কারণ এটি প্রতিনিয়ত আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিকে বাড়িয়ে দেয়। আপনি যদি কোনভাবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে যান তাহলে আপনার পুরো শরীর এই রোগ থেকে বাঁচতে পারে না এবং বুকে ব্যথার মাত্রাও বেড়ে যায়।

৯। কায়িক পরিশ্রমঃ 
আপনার যদি প্রতিদিন ৩০ মিনিট থেকে ৪০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস না থাকে তাহলে বুকের মাঝখানে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই মাঝে মাঝে নিজেকে হাঁটা চলার মাধ্যমে সুস্থ রাখুন।

১০। উচ্চ রক্তচাপঃ 
অতিরিক্ত উচ্চ রক্তচাপের ফলে আপনার মস্তিষ্কে যে রক্তক্ষরণ হয় তা বুকের মাঝখানে ব্যথা হওয়ার অন্যতম কারণ। কিন্তু আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপের বিষয়ে সচেতন না থাকেন তাহলে হার্ট অ্যাটাকের মত প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় 

আপনার যদি বুকের মাঝখানে ব্যথা সৃষ্টি হয়ে যায় তাহলে আপনাকে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা করতে হবে অথবা প্রাথমিকভাবে বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কিছু উপায় রয়েছে যেমন,

  • আপনার যদি অ্যাজমা জনিত সমস্যায় বুকে ব্যথা হয় তাহলে আপনাকে দূষিত পরিবেশে থাকা যাবে না এবং ঠান্ডা না লাগার বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
  • বুকের মাঝখানে অতিরিক্ত ব্যথা হলে অনেক সময় আলসারের কারণে খুব সমস্যা হয়, এই ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সমস্যা অনুভব করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • গ্যাস্টিকের কারণে বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে তেল জাতীয় খাবারকে বর্জন করতে হবে।
  • মাঝে মাঝেই হাঁটা চলার অভ্যাস করতে হবে, এটা অনেক সময় তিনতলা বা চারতলা সিঁড়ি দিয়ে উঠানামা করলেও হয়ে যায়।
  • নিশ্চিতভাবে নিজেকে ধূমপান থেকে বিরত করতে হবে যেন রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হতে পারে।
  • ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে কারণ এটি শরীরের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
  • খাবারকে না গিলে চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে যেন বদহজম হওয়া থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেন।
  • আপনি যদি আপনার মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণকে বন্ধ করতে চান তাহলে উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

খাবারের পরে বুকের মাঝখানে ব্যথা

মনে করুন, আপনি খাবার খেয়ে একটু বিশ্রাম নিচ্ছেন। ঠিক এই সময় হঠাৎ করে আপনার বুকের মাঝখানে ব্যথা করছে। কিন্তু খাবারের পরে আপনার এই বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কি তা জানেন কি? যদি এইরকমই আপনার খাবারের পরে বুকের মাঝখানে জ্বালাপোড়া ও অনেক বুকে ব্যথা করছে তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে। 

আপনার এই ব্যথাটি গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি সমস্যার জন্য হচ্ছে। কারণ এই সময়ে আপনার বুকের মাঝখানে অ্যাসিড রিফ্লাক্স হচ্ছে। আপনার পাকস্থলীতে যে অ্যাসিড রয়েছে সেটি যদি আপনার খাদ্যনালী দিয়ে উপরের দিকে গলায় উঠে আসে তাহলে এই অ্যাসিড রিফ্লাক্স হবে। এই সমস্যাটি আমাদের প্রতি একশ জনের মধ্যে পাঁচ জনের অ্যাসিড রিফ্লাক্স হয় যা খুবই যন্ত্রণাদায়ক।
আপনি যদি খাবারকে চিবিয়ে না খেয়ে গিলে ফেলেন তাহলে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তাই যদি আপনি অ্যাসিড রিফ্লাক্স এর সমস্যাটি কমাতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে হবে। আপনার বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় হচ্ছে আশেপাশে যত ধরনের গ্যাস্ট্রিক হতে পারে এইরকম খাবার রয়েছে সব ধরনের খাবারকে এড়িয়ে চলতে হবে। 

এছাড়াও আপনি যদি নিয়মিত আদার রস খেতে পারেন তাহলে গ্যাস্ট্রিক থেকে অনেকটুকু মুক্তি পেতে পারেন। পাশাপাশি যদি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ নিয়মিত সেবন করেন তাহলে আপনার খাবারের পরে যে বুকের মাঝখানে ব্যথাটা সৃষ্টি হতো সেটা অনেকাংশে কমে যাবে।

বুকের মাঝখানে ব্যাথার ঔষধ

বুকের মাঝখানে আপনার কি কারনে ব্যথা হচ্ছে সেটিকে প্রথমে নিশ্চিত করতে হবে। আপনার সমস্যা অনুযায়ী কারণ নির্ণয় করে বুকের মাঝখানে ব্যথার কারণ জেনে ওষুধ খেতে হবে। বেশিরভাগ সময়ই বুকের মাঝখানে ব্যথা হয় গ্যাস্ট্রিক ও অ্যাসিডিটি সমস্যার ফলে। তাই প্রথমে ব্যথাকে নির্ণয় করে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়ে দেখতে পারেন।

হৃদরোগ বা অন্যান্য সমস্যার ফলে যদি বুকের মাঝখানে ব্যথা হয় অর্থাৎ আপনার যদি অতিরিক্ত টেনশন বা মানসিক চাপ থাকে তাহলে বুকের মাঝখানে ব্যথা করতে পারে। বুকের মাঝখানে ব্যথা যদি খুব দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয়ে যায় তাহলে কোন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে হবে এবং সে অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।

বুকের মাঝখানে ব্যথার ঘরোয়া প্রতিকার

বুকের মাঝখানে ব্যথাকে আপনি চাইলে ঘরোয়া উপায়ের সাহায্য নিতে পারেন। কারণ বুকে ব্যথার জন্য ঘরোয়া উপায়গুলি আপনার জন্য অনেক বেশি কার্যকরী হতে পারে। যখনই আপনার বুকের মাঝখানে ব্যথা হবে বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় হচ্ছে প্রথমে আপনি আদাকে ছেঁচে রস করে তার সাথে এক চামচ মধু এবং অল্প একটু গরম পানি মিক্স করে খেতে পারেন যা আপনার ব্যথাকে কমাতে সাহায্য করবে। 

পাশাপাশি আপনি তুলসী পাতার রস, হলুদের রস, অ্যালোভেরার রস, রসুনের কোয়া, হালকা গরম পানীয়, আপেল সিডার ভিনেগার, বাদাম, ডালিমের রস ইত্যাদি ঘরোয়া উপায়ে নিজের বুকের মাঝখানের ব্যথাকে প্রতিকার করতে পারেন। তুলসীপাতায় এমন একটি ঔষধি গুণ রয়েছে যা আপনার কোলেস্টেরলকে বাড়িয়ে বুকের মাঝখানের ব্যথাকে প্রতিকার করতে সাহায্য করে। 

আপনি যদি অনেক ভালো উপকার পেতে চান তাহলে তাজা তুলসী পাতার রস খাবেন এবং সাথে এক চামচ মধু মিক্স করে নিবেন। বুকের মাঝখানের ব্যথাকে দূর করার জন্য হলুদ একটি স্বাস্থ্যকরী উপাদান। এটি ক্যালসিয়াম ও শ্বেত রক্তকণিকাকে প্রতিরোধ করে। আপনি যখনই দুধ খাবেন এর সাথে হলুদ মিক্স করে খেতে পারেন। এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে এক চামচ অ্যালোভেরার রস মিশিয়ে যদি আপনি খেতে পারেন। 

আরও পড়ুনঃ  অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজ বাড়ানোর উপায়

তাহলে আপনার বুকের মাঝখানের ব্যথা অনেকখানি কমে যাবে। শরীরের রক্ত চলাচলকে স্বাভাবিক করার জন্য মাঝে মাঝে রসুনের কোয়া ছেঁচে খেতে পারেন। মাঝে মাঝে আপনি বাদাম খেতে পারেন যা আপনার শরীরে অ্যাসিড রিফ্লাক্সকে কমিয়ে বুকের মাঝখানের ব্যথাকে কমিয়ে দিতে পারে। আপনার পেট যদি কোন কারনে ফুলে যায় বা পেটে গ্যাস হয় হালকা গরম জল খেলে সেটি কমে যেতে পারে।

কারণ পেটে ব্যথা থেকে আপনার বুকের মাঝখানে ব্যথার কারণ এ যে ব্যথার সৃষ্টি হয় সেই ব্যথাকে অনেকটুকু কমাতে সাহায্য করে যেমন, আপনি হিবিস্কাস চা খেতে পারেন। আপনার বাসায় যদি আইসপ্যাক থাকে তাহলে বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে মাঝে মাঝে সেখানে ঠান্ডা প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন যার ফলে আপনার মাংসপেশিতে যে টানটান অনুভব হয় সেটি কমে যাবে এবং বুকের মাঝখানের ব্যথা বন্ধ হবে। 

আপনি কি জানেন? বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, আপনার বাসায় যদি ডালিম থাকে, তাহলে বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় হচ্ছে ডালিমের রস খাওয়া। ডালিমের রসে যেই পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে তা হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে আপনার বুকের মাঝখানের ব্যথাকে নিয়ন্ত্রণ করে। ডালিমের রস খেলে আমাদের দেহে যেই পরিমাণ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে তা আমাদের বুকের মাঝখানের ব্যথাকে প্রতিরোধ করে।

শেষকথা

আজকের এই পোস্টে আপনারা বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কি, বুকের মাঝখানে ব্যথার কারন কি হতে পারে এবং আরও কিছু বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারলেন। বিস্তারিত ভালো লাগলে নিচের অংশে মন্তব্য করুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন। ২৫২৭৫


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url